বাংলাদেশঃ ছাত্র আন্দোলনের জোয়ার- কোনদিকে আগাচ্ছে? শেখ হাসিনার সরকারের পৈশাচিক নিপীড়নের পরও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সাহসী আন্দোলন চলছে। শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অনেকে। দুর্বল আকারে হলেও কারফিউ চলছে; ইন্টারনেট সংযোগ পুনরায় চালু হলেও ম্যাসেজিং সেবা এবং সোশাল মিডিয়া এখনো বন্ধ রয়েছে (শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, যখন এটি লেখা হচ্ছে, সরকার থেকে ঘোষণা এসেছে সোসাল মিডিয়া খুলে দেয়া হবে)। সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়ককে গ্রেফতার করেছে এবং চাপের মুখে তাদের দিয়ে এই বিবৃতি তৈরি করেছে যে, ছাত্রদের আন্দোলন সমাপ্ত। এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২৯ শে জুলাই ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট সহ সারা দেশে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। তারা আবারো নিপীড়ন ও গ্রেফতারের শিকার হয়েছে।
বস্তুবাদী দ্বান্দিকতার অ আ ক খ দ্বান্দিকতা কোনো কল্পকাহিনী বা অতীন্দ্রিয়বাদী বিষয় নয়। এটি আমাদের চিন্তনপ্রক্রিয়ার বিজ্ঞান যা আমাদের দৈনন্দিন জীবন নিয়েই সীমাবদ্ধ নয় কেবল, বরং তার থেকেও জটিল ও বিস্তীর্ণ বিষয় নিয়ে বোঝাপড়া করাই এর কাজ। দ্বান্দিকতা এবং প্রচলিত যুক্তিবিদ্যার মধ্যকার সম্পর্ক অনেকটা সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিতের মধ্যকার সম্পর্কের মত।
পরিবারের উদ্ভব এই লেখাটি ১৯৯৫ সনের ২৮শে জুলাই প্রকাশিত হয়েছিল সোসালিস্ট এপীল পত্রিকায়, ফ্রেদরিখ এঙ্গেলসের মৃত্যুর শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে। প্রবন্ধটি লিখেছিলেন ইন্টারন্যাশনাল মার্ক্সিস্ট টেন্ডেন্সির ব্রিটেন শাখা’র দুই কমরেড ম্যারি হ্যানসন এবং রব সোয়েল। বর্তমানে প্রবন্ধটি ভাষান্তর করেছেন মাশিয়াত জাহিন।
মায়ানমারঃ সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের সশস্ত্র বিপ্লবের আহ্বান মায়ানমারে একটি বিপ্লব ঘটছে। সামরিক জান্তার পাশবিক সহিংসতার মুখে জনসাধারণ অসীম সাহস প্রদর্শন করছে। শ্রমিক এবং তরুণ সমাজ আত্মরক্ষায় তৈরি হচ্ছে এবং নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী সংস্থাদের সাথে ঐক্য হচ্ছে। খুনি জান্তাকে গুরিয়ে দিতে এক ঐক্যবদ্ধ শসস্ত্র শ্রমিক সংগ্রাম এবং এক অনবরত হরতাল বর্তমান সময়ের দাবি!
মায়ানমার আন্দোলনঃ বিপ্লবের পূর্বাভাস মায়ানমারে ঘটে যাওয়া মিলিটারি ক্যু এর ফলে গণঅভ্যুত্থানের নতুন মাত্রা দেখা দিয়েছে গত কিছুদিনে।সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা গ্রহণ থেকে বাঁধা দিতে জনগণের দৃঢ় সংকল্পের ব্যাপারটি ক্রমবর্ধমান আন্দোলন আর ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে দেখা প্রকাশ পাচ্ছে৷ সামরিক জান্তা স্পষ্টভাবেই জনগনের দ্বারা যে বিরোধীতার শিকার হচ্ছে, তাকে আগ্রাহ্য করে চলছে। নাগরিক আন্দোলন ক্রমাগত বেড়েই যাচ্ছে। মিলিটারির কর্তাব্যক্তিদের কাছে সবচেয়ে চিন্তার বিষয় বলো এই আন্দোলন কেবলমাত্র রাস্তা’র বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশে সীমাবদ্ধ নেই, তা ব্যাপক ধর্মঘটে পরিণত হয়েছে। যেমন নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে:
স্নোপিয়ার্সারঃ ট্রেনের মধ্যে শ্রেণি সংগ্রাম আর বিপ্লব সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে বং জুন হো'য়ের ডিস্টোপিয়ান এ্যাকশন থ্রিলার স্নোপিয়ার্সার(Snowpiercer) সিনেমাটির টিভি সংস্করণ মুক্তি পায়, যেটিতে শ্রেণিভিত্তিক সমাজের সংগ্রামকে খুব শক্তিশালীভাবে রূপকার্থে দেখানো হয়েছে। স্টিভ জোনস সেটা নিয়ে আলোচনার জন্য মূল সিনেমার দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন।
সাম্য সম্পর্কে একজন লিবারেল অধ্যাপকের আলাপ I. Lenin, First Published in Pravda, 11 March, 1914লিবারেল অধ্যাপক জনাব তুগান-বারানোভস্কি রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়েছেন সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে। এবার তিনি সাম্যের প্রশ্নটিকে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জায়গা থেকে নয়, বরং একটি বিমূর্ত জায়গা থেকে আলোচনা করে এগিয়েছেন (সম্ভবত তিনি ভাবছিলেন এমন একটি বিমূর্ত আলোচনা তার আশেপাশের ধর্মীয় এবং দার্শনিক পরিবেশের জন্য উপযুক্ত হবে, হয়ত সেকারনেই তিনি এই পন্থা অবলম্বন করেছেন?)
স্পার্টাকাসঃ প্রাচীন প্রলেতেরিয়াতের প্রকৃত অবয়ব খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকে স্পার্টাকাস নামক একজন দাস রোমান পরাশক্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তৃতীয় সার্ভাইল যুদ্ধ নামে পরিচিত এই প্রসিদ্ধ দাসবিদ্রোহের নেতা ছিলেন(অথবা সম্ভাব্য আরও কিছু নেতাদের মধ্যে একজন) স্পার্টাকাস(১০৯ খ্রিঃ পূঃ - ৭১ খ্রিঃ পূঃ)। তার নেতৃত্বে একটি ছোট বিদ্রোহী গ্ল্যাডিয়েটর দল পরিণত হয় বিশাল এক বিপ্লবী ফৌজে, যারা সংখ্যায় ছিল প্রায় এক লাখের মত। শেষ পর্যন্ত রোমান সেনাবাহিনীকে পুরো শক্তি দিয়ে লড়তে হয়েছিল উক্ত বিদ্রোহ দমনের জন্য।
লেবাননঃ দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনব্যবস্থাকে কাঁপিয়ে দেয়া বৈরুত বিস্ফোরণ আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বৈরুত এলাকার জনগণের ঘুম ভাঙবে গতকাল লেবাননের কেন্দ্রীয় রাজধানীতে ঘটে যাওয়া এক ধ্বংসাত্মক নির্মম বিস্ফোরণের ধ্বংসস্তূপে, দালানকোঠার ধ্বংসাবশেষ, উল্টে পড়া গাড়ি ও যানবাহন এবং বিস্তর এলাকাজুড়ে ভেঙে যাওয়া জানালার কাঁচের টুকরোর স্তূপের মধ্যে।
ব্রিটিশ পুঁজিবাদের উত্থান ও দাসব্যবসার সম্পর্ক জুনের এগারো তারিখ ব্রিস্টলে দাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কলস্টনের মূর্তি উপড়িয়ে ফেলার ঘটনা আটলান্টিক দাস ব্যবসার সাথে ব্রিটেনের সংযোগকে আলোচনায় নিয়ে এসেছে। যদিও দাসব্যবসা১৮০৭ সালে ব্রিটেনে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ হয়েছিল, তবে ব্রিটেনের পুঁজিবাদের উত্থান আর বিশ্বশক্তি হিসেবে ব্রিটেনের আবির্ভাবের মূল খুঁটি হিসেবে কাজ করেছে এই নির্মম ব্যবসা৷
করোনাভাইরাস সংকট নারী অগ্রগতিকে ঠেলে দিবে ৫০বছর পিছনে দশকের পর দশক সংগ্রাম করে নারী মুক্তির যে অগ্রযাত্রা হয়েছিল সেটিকে আবার পশ্চাতেই ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সময়ের মহামারী ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়। এই সংকটকালীন পরিস্থিতিতে সংস্কারের যে অগ্রযাত্রা হচ্ছিলো, সেটিকে পশ্চাতপদ করাই পুঁজিবাদের হাতে একমাত্র পথ। নিপীড়নের স্থায়ী অবসান ঘটাতে আমাদের প্রয়োজন সমাজতন্ত্র।
আয়া সোফিয়ার মসজিদে রূপান্তরকরণ, এরদোয়ানের পরিকল্পনা এবং গ্রিক বুর্জোয়াদের জন্য তার “উপহারসামগ্রী” গত ১০ই জুলাই রাষ্ট্রপতির সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে, ৫৩৪ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত একটি ঐতিহাসিক বাইজেন্টাইন চার্চ আয়া সোফিয়াকে জাদুঘর থেকে মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় এরদোয়ান সরকার। তুরস্কে আধুনিক বুর্জোয়া রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্ক ১৯৩৪ সালে বাইজেন্টাইনের এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটিকে জাদুঘরে রূপান্তর করে, এই রূপান্তরকরণ তুর্কি রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক হিসেবেও কাজ করেছিল তৎকালীন সময়ে। বর্তমানে পুনরায় এরদোয়ানের এই রূপান্তরকরণকেও একটি প্রতীকী আচরণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়, নব্য-অটোমান সাম্রাজ্যবাদী “সুলতান” এরদোয়ান এবং প্রতিক্রিয়াশীল তুর্কি বুর্জোয়া শ্রেণীর আধিপত্যের প্রতীক।
বিপ্লবের বিরুদ্ধে ডেভিড হার্ভেঃ একাডেমিক “মার্ক্সবাদ” এর দেউলিয়াপনা ডেভিড হার্ভে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং একজন ভূগোলবিদ যিনি নিজেকে মার্ক্সবাদী বলে অভিহিত করেন। ২০০৮ সালের মন্দার বদৌলতে বিশাল সংখ্যক তরুণপ্রজন্ম মার্ক্সবাদের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে, যার ফলে তার ভিডিও লেকচার “ক্যাপিটাল” সিরিজও জনপ্রিয়তা পায় এবং লাখ লাখ ভিউ লাভ করে। এসব কারনে, সাম্প্রতিক সময়ে দেয়া তার বিবৃতি, যেখানে তিনি বিপ্লবী পদ্ধতিতে পুঁজিবাদ উৎখাত করার বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছেন, সেটি যৌক্তিকভাবেই একধরনের উত্তেজনাপূর্ণ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ভগৎ সিং ঃ একজন জাতিয়তাবাদী না কি সমাজতান্ত্রক ছিলেন ? বিগত ২৮শে সেপ্টেম্বর সাউথ এশিয়ার এক মহান বিপ্লবী ভগৎ সিং এর ১০৫ তম জন্ম দিবস পালিত হলো। আজকে আমাদের এই পজন্মের জন্য তার ব্রিটিশ তাড়ানো সাম্রাজ্যবাদ বিনাশী সশস্ত্র লড়াই সংগ্রাম এক মহান প্রেরণার উৎস হয়ে আছে। ভগৎসিংকে ২৩শে মার্চ ১৯৩১ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাম্রাজ্যবাদী বিটিশ রাজ হত্যা করেছিল। তবে আজ ও তিনি অত্র অঞ্চলে শ্রেনী সংগ্রামীদের কাছে একজন মহান বীর হিসাবেই বেচেঁ আছেন। তার মার্কসবাদ চর্চার পদ্ধতী এমন কি জেলখানায় থেকে ও মার্ক্সীয় ক্যাডার তৈরীর প্রচেষ্ঠা এবং নিরন্তর আন্দোলন সংগাম আমাদের জন্য পথের দিশা হয়ে আছে।